জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের অন্যতম শিকার সাহিত্য সমালোচক মুনীর চৌধুরীর ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুনীর মানস’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ছাত্র সংসদের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে তরুণ চিন্তকদের ভাবনায় শিক্ষার্থীদের থেকে প্রবন্ধ পাঠ করেন ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী সোহান শরীফ।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে মুনীর চৌধুরীর ‘তুলনা’: রচনায়, সমালোচনা নিয়ে কথা বলেন ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক মাশরুর শাহীদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘তুলনামূলক সাহিত্যের সাথে মুনীর চৌধুরীর ছিল একটি অঙ্গাঅঙ্গি সম্পর্ক। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশে অনেকটা তুলনামূলক সাহিত্যের চর্চা শুরু হয়। বলা যায়, ওনার সারাজীবনের কাজগুলো দিয়েই তিনি তুলনামূলক সাহিত্যের জন্য কাজ করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলা সাহিত্যের জন্য নিবেদিত মানুষদের একজন মুনীর চৌধুরী। তিনি নিজেকে কখনোই জ্ঞান ও কাজের বাইরে রাখেননি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত দেশ ও মানুষের কল্যাণের কথা ভেবেছেন। ভেবেছেন নতুন করে দেশ, সমাজ ও মানুষকে সাজানোর কথা। মুনীর চৌধুরীর দূরন্ত প্রয়াসকে পূঁজি করে গড়ে উঠতে হবে আমাদের নতুন প্রজন্মকে।’
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে স্মৃতিকথায় মুনীর চৌধুরী নিয়ে আলোচনা রাখেন তাঁরই ছেলে আসিফ মুনীর। আবেগঘন কন্ঠে তিনি বলেন, আমার বাবার স্মৃতির প্রায় সবটাই আমার মায়ের থেকে শোনা। যদিও গত দু বছর আগে প্রায় ৯২ বছর বয়সে আমার মা মারা যান। অনেক বয়স হওয়া স্বত্বেও শেষ দশ বছরে তিনি বেশ কিছু স্মৃতিচারণ করেছিলেন।
ব্যক্তি মুনীর চৌধুরীর কথা যদি বলি, তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক ও কুশলী বক্তা, সফল নাট্যপ্রতিভা ও ক্ষুরধার সাহিত্য-সমালোচক, জীবনের নিষ্ঠাবান রূপকার ও সমাজচেতনায় দীপ্ত পুরুষ। আমার কাছে তিনি বাবা ছাড়াও ছিলেন- শিক্ষক, বন্ধু ও পথপ্রদর্শক। আমার মা তাঁর জীবনের প্রায় প্রতিটি কাজেই সাথে ছিলেন। আসিফ মুনীর আরও বলেন, আমরা বাবার স্মৃতি রক্ষার্থে একটি স্মৃতি রক্ষা ট্রাস্ট করার উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে মুনীর চৌধুরীর ১৯৪৮ থেকে ৭১ পর্যন্ত দেশের প্রতি প্রতিটি অবদানের স্মৃতি সংরক্ষণ করা হবে।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শামীম রেজা, সহকারী অধ্যাপক হামীম কামরুল হক, ইশিতা আখতার ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।