একটি রক্তাক্ত ছুরির আত্মকথা

প্রিতম ধর

একটা মাঝারি সাইজের ছুরি আমি। মোড়কের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে অপেক্ষা করতেসি কখন সেই মানুষ টার দেখা পাবো যে আমায় ব্যাবহার করবে।প্রতীক্ষার অবসান হতে বিলম্ব হল না।
এক সুদর্শন লোক আমাকে পছন্দ করে কিনে নিয়ে গেল। খুব খুসি আমি যে আজ আমি কারো ব্যাবহারের সামগ্রী। রান্নাঘরে অন্য ছুরি গুলার সাথে জায়গা হল আমার। কিছুক্ষন বাদে সেই লোক এক ভদ্রমহিলা সহ এল রান্না ঘরে। কথা বলতে লাগলো। হঠাৎ আমাকে হাতে নিয়ে ভদ্রমহিলার গলার উপর সজোরে আঘাত করলো।রক্তে ভেসে যাচ্ছে পুরো ঘর। ওই মহিলার আর্তচিৎকারে ঘর কেপে উঠছে আর সেই লোকটি হাসছে। আর আমার পুরো গায়ে রক্তে লেগে আছে আমার। মানুষের রক্তের স্বাদ পেলাম আমি আর পুলকিত হচ্ছি বারবার।এভাবেই শুরু হল আমাকে দিয়ে লোকটির নৃসংস হত্যাকান্ডের হাতে খড়ি।

ওই লোকটি এভাবে প্রায়ই কিছু মানুষকে বাড়িতে নিয়ে আসতো আর আমার ধারালো আর কঠোর স্পর্শ লাগতো সেই লোক গুলোর শরীরে।আমার ও রক্তের প্রতি নেশা বেড়েই চলেছে। আরো রক্তে রাঙিয়ে উঠতে চাই আমি।

ওই লোকটি আমাকে হাতে নিয়ে প্রায় কথা বলতো।নিজ মনে। জানিস আমি কেন তোকে ব্যবহার করে এত মানুষ মেরেছি।কারন তাদের রক্তের অঝোর ধারা আর আর্তচিৎকার আমাকে আনন্দ দেয়।প্রশান্তি এনে দেয়।আর তোকে দিতে পারি নতুন রক্তের স্বাদ৷

এই সব নৃসংস কর্মকান্ড কখনো লুকিয়ে থাকে না।পুলিশ হন্তদন্ত হয়ে খুজছে আমার মনিব কে।আর আমার মনিব আমাকে সাথে নিয়ে দৌড়ে ছুটে পালাচ্ছে। তবে হেরে গেল শেষমেষ পুলিশের কাছে। কিন্তু সে জেল খানার কয়েদি হতে রাজি নয়।আমাকে পকেট থেকে বের করে গলা বরাবর ধরল। আর বললো আমায় শেষ বারের মত রক্তের তৃষ্ণা মিটিয়ে নে।আর দেখা হবে না কখোনো। আবার আমি পেলাম উষ্ণ রক্তের স্বাদ।

সময়ের কাটা এগিয়ে যাচ্ছে আর আমার স্থান হয়েছে ডাস্টবিনে।হয়তো আমাকে রিসাইকেল করার জন্য পাঠানো হবে বা নস্ট করা ফেলা হবে।তবে আমার এই রক্তের তেষ্টা মিটে নি। মিটবে না কখনো

শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *