জাবি ঘিরে রমরমা মাদক ব্যবসা!

জাবি ঘিরে রমরমা মাদক ব্যবসা

জাবি প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ঘিরে ভয়ঙ্কর মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও পাশ্ববর্তী এলাকার কয়েকটি স্পটে নিয়মিত ইয়াবা, ফেনসিডিল ও হেরোয়িনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক কেনাবেচা হয়। মাঝেমধ্যে মাদক ব্যবসায়ীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলেও কিছুদিন পরই ছাড়া পেয়েছেন। তবে মাদক মাফিয়ারা থাকেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের নাম এসেছে। আবার ছাত্রলীগ নেতাদের মাসোয়ারা দিয়েও মাদক ব্যবসা করছেন অনেকে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাঙামাটি এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতেন ফরিদ হোসেন ওরফে পাঞ্চু। ফরিদের কাছ থেকে দৈনিক দুই হাজার টাকা চাঁদা নিতেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাব্বির হোসেন নাহিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান জয়। তবে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় গত বছরের ১৬ জুলাই নাহিদ ও জয়ের নেতৃত্বে ফরিদকে তুলে এনে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে ছাত্রলীগের নেতারা। এরপর থেকে শারীরিক অসুস্থতার জন্য ফরিদ মাদক ব্যবসা বন্ধ রেখেছেন বলে জানা গেছে। এখন আপেল মাহমুদ নামে আরেক ব্যক্তি ওই এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তবে সাব্বির হোসেন নাহিদ ও মেহেদী হাসান জয় নিজেরাও মাদক ব্যবসায়ে জড়িত। এছাড়া অন্য ব্যবসায়ীদের থেকেও মাসোয়ারা নেন তারা।

এছাড়া রাঙামাটি এলাকায় হেরোইন ব্যবসার মূল হোতা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তানভীর ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদ খান শিমুল এবং আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী মেহেদী হাসান রিফাত। তাদের মধ্যে, শিমুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর ছেলে। বহিরাগত তিন যুবকের মাধ্যমে আশুলিয়ার পল্লিবিদ্যুত এলাকা থেকে হেরোইন এনে রাঙামাটি এলাকায় ভাগবাটোয়ারা করেন তারা। পরে সেখান থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করেন তারা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের (৪১তম ব্যাচ) সাবেক শিক্ষার্থী আরমান খান যুবর নাম ভাঙিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন অনেকে। তার বড়ভাই আল নাহিয়ান খান জয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পরই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। যুবর বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসায়ীদের মারধরসহ নানা অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে মাদক ব্যবসা থেকে মাসোয়ারা নেওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। তার মাদকসেবন ও অপরাধের সহযোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৪২তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন। এছাড়া যুব নাম ব্যবহার করে মাদক ব্যবসায় জড়িতদের মধ্যে মো. তাসকিন খান একজন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী আমবাগান এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করেন। এর আগে, ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে আটক হন তাসকিন।

এদিকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে মীর মশাররফ হোসেন হলের একটি কক্ষে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মো. মামুনুর রশিদ মামুন মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৭ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অবস্থান নিয়ে ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ইয়াবা বিক্রি করতেন তিনি। তার ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একটি চক্র জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান অনিক এই ইয়াবা চক্রের মূল হোতা। ধষর্ণকাণ্ডের ঘটনার পর তিনি হল ছেড়ে পালিয়ে যান। মীর মশাররফ হোসেন হলে তিনি ‘গুটি অনিক’ নামেও পরিচিত। ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী উৎসবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে মদ আনতে গিয়ে বংশাল থানায় আটক হন অনিক। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসাইন বর্তমানে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিপ্লব হোসাইন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা ভিত্তিহীন। এ ধরণের কাজে কখনোই জড়িত ছিলাম না। এছাড়া মামুনের সাথে আগে যোগাযোগ হয়নি। ধর্ষণের ঘটনার পর তাকে চিনেছি।’

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে এবং চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থেকে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে ইয়াবা আনতেন মামুন। মাসে সাত থেকে আট হাজার পিস ইয়াবা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাশ্ববর্র্তী এলাকায় তিনশত টাকা দরে বিক্রি করতেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে মামুনের ইয়াবা সরবরাহকারীর দায়িত্বে ছিলেন ধষর্ণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান এবং সহ-সভাপতি শাহ পরাণ। যদিও ধর্ষণের ঘটনার পর মোস্তাফিজুর রহমানকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশর্^বর্তী নয়ারহাটে টিটু, কলমাতে আতিক ও বিশমাইলে হাসান নামে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি মামুনের ইয়াবা সরবরাহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মামুনকে চট্টগ্রাম থেকে আরিফ, কক্সবাজার থেকে সাইফুল ইসলাম বাপ্পী ইয়াবা সরবরাহ করতেন। মাদক মামলায় বেশ কয়েকবার কারাগারে গেছেন মামুন। কারাগার থেকে বের হয়ে ফের ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়তেন তিনি। মামুনের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানা, বগুড়া সদর থানা, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানা ও কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় পৃথক চারটি মাদক মামলা রয়েছে।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রোয়ালিয়া এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করেন আরিফুল ইসলাম ওরফে ছোট আরিফ ও তার বড় ভাই শরিফুল ইসলাম শরিফ। তাদের মধ্যে, ছোট আরিফ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী। পাথালিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ওরফে ইয়াবা তৌহিদ তাদের শেল্টার দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বটতলা বাজার এলাকায় মাদক ব্যবসায়ে জড়িত নুরুজ্জামান ওরফে নুরা, মামুন, আল-আমীন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী মাহি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে কেউ প্রমাণ দিতে পারলে, যা শাস্তি হবে তা মাথা পেতে নিবো। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন করার জন্য অনেকে এমন অভিযোগ আনতে পারে। শরিফ ও আরিফ রোয়ালিয়া এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। আমি নিজে উদ্যোগ নিয়ে তাদের মাদক ব্যবসা বন্ধের চেষ্টা করেছি।’

ছাত্রলীগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সেনওয়ালিয়া এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করেন শামীম ও সুমন। তারা আশুলিয়ার জিরানী এলাকা থেকে মাদক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল এলাকায় কর্মচারী কোয়ার্টার সংলগ্ন মাঠের ভাঙা প্রাচীর দিয়ে ভিতওে ঢুকেন। এছাড়া বড় সেনওয়ালিয়া এলাকায় মাদক কারবার চালাচ্ছেন হুমায়ুন কবির ও পারভেজ। অন্যদিকে গোকুলনগর এলাকায় রতন, আবুল ও শরিফ মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এছাড়া আমবাগান এলাকায় স্থানীয় আছেরউদ্দিন ও আইয়ুব নামে দু’জনকে ব্যবহার করে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছেন মাসুদ ও অনিক।

অন্যদিকে ইসলামনগর এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করেন পিন্টু ওরফে খোড়া পিন্টু, রফিকুল ইসলাম রফিক, পঙ্গু রনি, ইমন ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত গার্ড পলাশ। এছাড়া কাঁঠালবাগান এলাকায় রাজমিস্ত্রি পেশার আঁড়ালে ফরিদ ও মিরা মাদক ব্যবসায়ে জড়িত। এছাড়া ওই এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কর্মকর্তার ছেলে শ্যামল মাদক ব্যবসায়ে জড়িত। তবে প্রথমে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ৪১তম ব্যাচের এক সাবেক শিক্ষার্থীর শেল্টারে মাদক ব্যবসা শুরু করেন ফরিদ। অন্যদিকে গেরুয়ায় শরিফ নামে এক ব্যক্তি মাদক ব্যবসায়ে জড়িত।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পানধোয়া এলাকার মাদক সম্রাট সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মাসুদ রানা। ইন্টারনেট ও ডিশ ব্যবসার আঁড়ালে তিনি মাদক ব্যবসায় জড়িত। তার সহযোগী মমিনউল্লাহ মমিনও মাদক ব্যবসা পরিচালনা করেন। এছাড়া মাসুদের বিরুদ্ধে সরকারি জায়গায় রেস্টুরেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করার অভিযোগ রয়েছে। তার রেস্টুরেন্ট ব্যবসার দায়িত্বে থাকা হৃদয় নামে এক যুবক মাদক ব্যবসায়ে জড়িত। এছাড়া পানধোয়া এলাকায় ফারুক, জাহিদুল ইসলাম বাবু, নুর ইসলাম, নিলয় ও রানা নামে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ে জড়িত।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারশাদ হোসেন আবির, সহ-সভাপতি শাহ মোস্তাক আহমেদ, ত্রাণ ও দূর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক শান্ত মাহবুব ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাদক ব্যবসায়ে জড়িত। তাদের মধ্যে, শান্ত মাহবুব বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর ছেলে। স্থানীয় হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসোয়ারা নেন তিনি।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইপার দিলীপ কুমার, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কর্মচারী মফিজুল ইসলাম ওরফে সাদ্দাম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের কর্মচারী মো. খালেক, প্রশাসনিক ভবনের কর্মচারী মামুনসহ কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে, মাদক ব্যবসায়ে জড়িত থাকায় মামুন চাকরিচ্যুত হলেও পরে আবার ফিরে পেয়েছেন। এছাড়া খালেককে তিনশ’ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়।

অভিযোগ অস্বীকার করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের কর্মচারী মো. খালেক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা মিথ্যা। আমাকে ফাঁসানোর জন্য এগুলো করা হচ্ছে। আমি এসব কাজে জড়িত না।’ এছাড়া বাকি কর্মচারীদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়ে সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মাসুদ রানা বলেন, ‘এখন মাদক ব্যবসার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তবে কারা এখন ব্যবসা চালাচ্ছে, তাদের বিষয়ে তথ্য দিতে পারবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীও এই ব্যবসায়ে জড়িত।’ এরপর কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর তথ্য দেন তিনি।

মাদক ব্যবসায়ী ফরিদ হোসেন পাঞ্চু বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। এসব বিষয়ে এখন খোঁজ খবর নেই। তবে আগে প্রতিদিন ক্যাম্পাসে প্রায় দুই হাজার পিস ইয়াবা কেনাবেচা হতো। ক্রেতাদের মধ্যে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী। আবার অনেকে ক্যাম্পাস থেকে মাদক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে ঢাকায় নিয়ে যান।’

তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সাব্বির হোসেন নাহিদ, মো. ফারশাদ হোসেন আবির, শাহ মোস্তাক আহমেদ, শান্ত মাহবুব, তানভীর ইসলাম ও রাশেদ খান শিমুল মাদক ব্যবসায়ে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এছাড়া অন্য অভিযুক্তদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরোটলারেন্স। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাদের মধ্যে কেউ মাদক ব্যবসায়ে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।’

বিশ্ববিদালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘সন্দেহজনকভাবে শিক্ষার্থীদের তল্লাশি করার এখতিয়ার আমাদের নেই। ফলে আমাদের সামনে শিক্ষার্থীরা মাদক কেনাবেচায় জড়িত থাকলেও তাদের ধরতে পারিনা। তবে এসব বিষয়ে সবসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি। যদিও বিভিন্ন সময়ে বহিরাগত কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।’

বিশ্ববিদালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকার মাদক নির্মূলে আমরা পদক্ষেপ নিতে পারিনা। তবে আশুলিয়া থানা পুলিশকে অনেকবার অবহিত করেছি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের যারা জড়িত, তাদের বিষয়ে তথ্য দিলে ব্যবস্থা নিবো।’

সার্বিক বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এফ এম সায়েদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এরপর তার মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক (মুখপাত্র) কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ধর্ষণকাণ্ডে জড়িত মামুন ও মুরাদকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিশ্ববিদ্যালয় ও পাশ্ববর্তী এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের তথ্য পেয়েছি। আমাদের সদস্যরা সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত কার্যক্রম চলমান রেখেছেন। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে শীগ্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবো।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *