শিক্ষার্থীদের ভাবনায় নারী দিবস

নারী অধিকার বাস্তবায়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৮ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উদযাপন করা হয়। বর্তমান সমাজের উন্নয়নে পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নারীরা। দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই নারীদের অবদান প্রশংসনীয়। বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে সংবাদ বাংলার কাছে নিজেদের ভাবনা তুলে ধরেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সুমাইয়া আক্তার 

ইংরেজি বিভাগ

বর্তমান যুগ সমতার যুগ। নারী মুক্তি, নারীর স্বাধীনতা, নারীদের সমান আধিকার, আত্মমর্যাদার লড়াইকে সামনে এগিয়ে নেবার শপখ নিয়েই সারা বিশ্ব আজ এই দিনটি পালন করছে। সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশ এই দিনটি পালন করলেও আজও আজও তারা নারীদের যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে পারছে না। বিশেষ করে আমাদের দেশের পুরুষরা এখনো এ দিবসটিকে ততটা নিজেদের বলে মনে করতে পারছে না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, প্রচলিত সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুশাসনে নারীরা শিক্ষা, কর্মসংস্থান, উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণসহ নানা রকম সুযোগ থেকে বঞ্চিত। 

নারী দিবস  শুধু  কাগজে কলমে কিংবা মুখে প্রচলিত থাকলেই হবে না। দিনটি সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে  চর্চা হোক। তাহলে নারীদের কাছে প্রতিটি দিনই নারী দিবস হিসেবে পালিত হবে। একজন নারী হিসেবে এটিই আমার প্রত্যাশা।

সুরাইয়া পিংকি

পরিসিংখ্যান বিভাগ

নারী! ছোট্ট একটা শব্দ হলেও এর মাহাত্ম্য বিশাল। কখনো মা, কখনো বোন, কখনো স্ত্রী কিংবা প্রেয়সী হিসেবে তার জুড়ি মেলা ভার। সমাজের অর্ধাংশ নারী। একটি জাতি গড়ে ওঠে মা জাতির হাত ধরে। বর্তমান সমাজে নারীরা অনেকটা এগিয়ে গেলেও বিস্তর কিছু ক্ষেত্রে তারা অবহেলিত। সমাজকে অগ্রসর হতে হলে পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও সমান অধিকার দিতে হবে। তবেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পাবে একটি সুন্দর সমাজ। তাই এই নারী দিবসে সকল নারীকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও সম্মান যাদের হাত ধরে গড়ে ওঠে একটি নতুন প্রজন্ম, একটি সুন্দর সমাজ।

মারুফা মজুমদার, 

শিক্ষা প্রশাসন বিভাগ,

নারী বলতে আপনার চোখে কি ভেসে উঠে?সর্বাঙ্গে নারীত্বের ছাপ,বিজ্ঞাপরে দেওয়া রং ফর্সাকারী ক্রিমের ন্যায় উজ্জ্বল চেহারার অধিকারী নাকি সর্বগুণে পটু এমন কাউকে? না,আমার কাছে নারী বলতেই চোখে ভাসে সেই নারীর কথা,যে ১০ মাস নিজের শরীরে আরেকটি জীবনকে গড়ে তোলে,সেই আজাদের মাকে মনে পড়ে,যিনি জীবনের অর্ধেকটা সময় রুটি খেয়ে বেঁচেছিলেন,সন্তানের মৃত্যুর আগে ভাত না খাওয়ার আক্ষেপে,মনে পড়ে জাহানারা ইমামের কথা,যিনি দেশমাতা কে রক্ষার জন্য নিজের বড় ছেলের জীবন উৎসর্গ করেছেন,মনে পড়ে ইলা মিত্রের কথা,যিনি আদিবাসী সহ সকলের কাছে রানী মা নামে পরিচিত ছিলেন।চোখে ভেসে উঠে কাঁকন বিবি,তারামন বিবি,মাদার তেরেসা সহ অসংখ্য নারীর চিত্র।

সর্বোপরি আমি দেখতে পাই সেই ১৯০৮ সালের নারীদের ছবি যারা নিজেদের অধিকারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল।যেখানে নারীর সম্মান আছে,সংস্কৃতির উত্থান সেখানেই।

আদি প্রাণের সহজ প্রবর্তনা নারীর স্বভাবের মধ্যে।সেইজন্য নারীর স্বভাবকে মানুষ রহস্যময় আখ্যা দিয়েছে।নারী মানেই,”তোমার আঁচল পাতা নিখিল দুঃখী নিপীড়িত তবে,

বিষ শুধু তোমা দহে যথা তব মাগো পীড়িত নিখিল ধরণীর ভার বহে।

ইপতি রানি

ইংরেজি বিভাগ

নারী দিবসে আমার প্রত্যাশা একটা ছেলেশিশু জন্মের পর তার পরিবার যেভাবে খুশি হয় ঠিক সেই খুশিযেন একটা মেয়েশিশুর ক্ষেত্রে ঘটে।  প্রতিটি পরিবার যদি তাদের কন্যা সন্তাদের সমর্থন করে তবে তারাও সম্মানের শীর্ষ স্থানে পৌছতে পারবে।নারীদের আসলে তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে তাদের প্রাপ্য অধিকার গুলো পাওয়ার জন্য কথা বলে।আমরা নারীরা যদি নিজেদের মূল্যবোধও মানসিকতাকে উন্নত রাখতে পারি তাহলে কোনো সমাজই আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না।নারীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজের অধিকার এবংসম্মানগুলো বুঝে নেক এটাই প্রত্যাশা। তাই বিশ্বাসে সকল নারীদের জানাই নারী দিবসের শুভেচ্ছা। আমরা নারী, আমরা পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *