নানামুখী সংকটে জর্জরিত জাবির নবনির্মিত ছাত্রী হল, ভোগান্তিতে ছাত্রীরা

সমস্যায় জর্জরিত জাবির নবনির্মিত ছাত্রী হল

সিফাত জেরিন, জাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনির্মিত তিনটি ছাত্রী হলের মধ্যে একটি হলের উদ্বোধন করা হয়েছে। তবে উদ্বোধনের প্রায় নয় মাস পেরিয়ে গেলেও নানামুখী সংকটে ভুগছে নবনির্মিত ফজিলাতুন্নেসা হল।

সরেজমিনে ছাত্রীদের হল ঘুরে দেখা যায়, নবনির্মিত ফজিলাতুন্নেসা হলে প্রতি কক্ষে ২ টি করে সিলিং ফ্যান স্থাপন করা হয়েছে। অপরদিকে ছাত্রদের শেখ রাসেল হলে প্রায় একই আয়তনের প্রতিটি কক্ষে রয়েছে চারটি সিলিং ফ্যান। ফলে গরমের দিনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ছাত্রীদের। সমস্যা নিরসনে টেবিল কিংবা চার্জার ফ্যান কিনতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

শুধু তাই নয়, হলগুলো উদ্বোধনের নয় মাস পেরিয়ে গেলেও পড়ার টেবিলের ব্যবস্থা করা হয়নি। দশতলা ভবনের বেজমেন্টে রিডিংরুমের ব্যবস্থা করা হলেও সেখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা নেই। ফলে আলোকস্বল্পতায় দিনের বেলায়ও শিক্ষার্থীদের বাতি জ্বালিয়ে পড়তে হয়। এছাড়া রিডিং রুমে নেই কোনো শৌচাগার ও খাবার পানির ব্যবস্থা। এছাড়া ক্যান্টিনে খাবারের উচ্চমূল্যের অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার ইতি জানান, ‘ক্যান্টিনের খাবারের দামের তুলনায় পরিমাণ কম দেওয়া হয়। এছাড়া রিডিং রুমে কোনো জানালা না থাকায় ও আলো-বাতাসের অপর্যাপ্ততার জন্য দমবন্ধ লাগে। ওয়াশরুম ব্যবহারের জন্য বারবার নিজ ফ্লোরে যেতে হয়। এতো অসুবিধার জন্য রিডিং রুমে পড়ার আগ্রহ আর থাকেনা।’

ছাত্র ও ছাত্রীদের হলে ফ্যানের সংখ্যার তারতম্যের কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘দুই হলে দুইজন আলাদা কনসালটেন্ট কাজ করেছেন। তারা যেভাবে ভালো মনে করেছেন সেভাবে ডিজাইন করেছেন। এজন্যেই এক হলে ৪টি ফ্যান এবং আরেক হলে ২টি ফ্যান দেওয়া হয়েছে।’

পড়ার টেবিলের ব্যাপারে তিনি জানান, ‘ছয়টি হলের প্রভোস্টদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ মিটিংয়ে এই ব্যাপারে আলোচনা হয়ে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডারের ৪ থেকে ৫ মাসের মধ্যে হলগুলোতে শেল্ফযুক্ত পড়ার টেবিল ও চেয়ার দেওয়া যাবে আশা করা যায়।’

সার্বিক বিষয়ে প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘হলের সকল সংকট নিরসনে আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি। নতুন মালিক হলের ক্যান্টিনের দায়িত্ব নিয়েছে। আশা করি খাবারের মান বৃদ্ধি পাবে। তবে রিডিং রুমের বেজমেন্টে শৌচাগার নির্মাণ করা সম্ভব নয়। শীঘ্রই গ্রাউন্ড ফ্লোরে শৌচাগার নির্মাণ করা হবে।’

উল্লেখ্য, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে জাহাঙ্গীরগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি নতুন আবাসিক হলের নিমার্ণ কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য একটি করে আবাসিক হল উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে আরোা চারটি আবাসিক হল।

প্রতিবেদক: সিফাত জেরিন

সহযোগী সদস্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *