জাবি প্রতিনিধি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৪০তম সিনেট অধিবেশন চলাকালে সিনেট সদস্য মো. মোতাহার হোসেন মোল্লার বিধি-বহির্ভূত, অসংলগ্ন ও অশালীন আচরণের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
রবিবার (২৫ জুন) এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের এ সংগঠন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২৪ জুন অনুষ্ঠিত সিনেট অধিবেশন চলাকালে উপাচার্যের ভাষণের পর ‘পয়েন্ট অব অর্ডারে’ অধ্যাপক শামসুল আলম মেয়াদোত্তীর্ণ সিনেট সহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বক্তব্য রাখেন। বারবার আশ্বাস দিয়েও প্রশাসন কর্তৃক নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ না নেয়ায় এবং ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একমাত্র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এসময় সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুল আলম পাশে বসে থাকা সিনেট সদস্য মো. মোতাহার হোসেন মোল্লার দ্বারা উদ্ধত, বিধি-বহির্ভূত, অসংলগ্ন ও অশালীন আচরণের শিকার হয়েছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, মোতাহার হোসেন মোল্লা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির তোয়াক্কা না করে, সভার সভাপতির অনুমতি না নিয়েই উত্তেজিত কন্ঠে ‘আপনি ফাজলামো করেন? বেয়াদবি করেন? আপনি কেন এই কথা বলবেন?’ ইত্যাদি বলতে বলতে অধ্যাপক শামছুল আলমকে আক্রমণে উদ্বত হন।
তৎক্ষণাত এই ঘটনাকে পেশীশক্তি প্রদর্শন উল্লেখ করে প্রতিবাদ ও মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. শামছুল আলম, অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, অধ্যাপক ড. মাহবুব কবির, অধ্যাপক ড. মো. সোহেল রানা, অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা, অধ্যাপক ড. মুহম্মদ নজরুল ইসলাম, ব্যরিস্টার শিহাব উদ্দিন খান এবং সাবিনা ইয়াসমিন তাৎক্ষণিকভাবে সিনেট সভা থেকে ওয়াক আউট করেন। এ সময় উপাচার্য সংঘটিত ঘটনার প্রতিকারে উদ্যোগ না নিয়ে অধিবেশনের আলোচ্যসূচি অনুমোদন করিয়ে নেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সহনশীল ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে মোতাহার হোসেন মোল্লাকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁর ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অসংযত আচরণের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানাচ্ছি। তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অসংযত আচরণের পরিবর্তন না হলে তাকে সিনেট, সিন্ডিকেট সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ে প্রতিহত করার আহবান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠা একজন ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী পর্ষদের সদস্য হিসেবে বেআইনিভাবে বহাল রাখার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নীতি-বিবর্জিত অবস্থান প্রকাশ পায়। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন পদ বাগিয়ে দেয়ার জন্য যে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে তার অন্যতম হোতা হিসেবেও জনাব মোতাহার হোসেনের নাম উঠে এসেছে।
এই ঘটনার বিচার দাবি করে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১২ টায় শিক্ষকদের প্রতিনিধি দল উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি জমা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুল আলম, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ নূরুল ইসলাম, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আমির হোসেন ভূঁইয়া, ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইআইটি) বিভাগের অধ্যাপক মোঃ ফজলুল করিম পাটোয়ারী।