সাভারের রাজ্জাক প্লাজায় জাবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা: আহত ৫

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

মোবাইল সারানোকে কেন্দ্র করে সাভারের রাজ্জাক প্লাজায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর মোবাইল দোকানিদের সংঘবদ্ধ হামলায় ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিকেল সাড়ে ০৫ টার দিকে সাভারের রাজ্জাক প্লাজা মার্কেটের তৃতীয় তলার মোবাইল ফোনের মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানা যায়, গত রবিবার (১১ জুন) প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী রাজ্জাক প্লাজার সিয়াম টেলিকমে মোবাইল সারাতে নিয়ে গেলে দোকানের লোকেরা মোবাইল অন্যত্র নিয়ে মোবাইলের পার্টস খুলে রেখে দেয় বলে সন্দেহ হয় তাদের। পরবর্তীতে মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিকেলে তার কয়েকজন বন্ধু দোকানদারদের সাথে কথা বলতে গেলে কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে কয়েকটি দোকানের কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। তারা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, রড, লাঠি নিয়ে শিক্ষার্থীদের এলোপাথাড়ি মারধর করে। এসময় ৫১ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর মাথায় ধারালো যন্ত্র দিয়ে কোপ দেয়া হয় এবং অপর এক শিক্ষার্থীর পিঠে উত্তপ্ত তাতাল দিয়ে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের প্রথমে সাভার সুপার মেডিকেলে ও পরবর্তীতে এনাম মেডিকেলে নেয়া হয়।

মারধরের ঘটনা জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা রাজ্জাক প্লাজায় চলে আসে এসময় মার্কেটের মূল ফটক আটকিয়ে দেয় মালিকপক্ষ। ফলে ভেতরে আটকা পড়ে যায় কিছু শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সাভার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এক পর্যায়ে উদ্ভত পরিস্থিতির সমাধানে রাজ্জাক প্লাজা দোকান মালিক সমিতির অফিস কক্ষে পুলিশের উপস্থিতিতে আলোচনায় বসে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা। দুই ঘন্টার অধিক সময় ধরে আলোচনা চলে। এসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান, সাভার থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা, রাজ্জাক প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির হিমু, জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা শেষে উপস্থিত সকলে এনাম মেডিকেলে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে যান। গুরুতর আহত শিক্ষার্থীর বিষয়ে এনাম মেডিকেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মিঠুন বলেন, ভিক্টিমের মাথায় চোট লেগেছে, রক্তক্ষরণ হয়েছে তবে সিটি স্ক্যান করে কোনো ইন্টার্নাল ড্যামেজ পাওয়া যায় নি, ঔষধের মাধ্যমেই ঠিক হয়ে যাবে আশা করছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, দোকান কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল স্বীকার করেছেন। তারা আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে চাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে, তাদের মতামত নিয়ে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

রাজ্জাক প্লাজা দোকান মালিক ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির হিমু বলেন, শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করবো। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যেসব ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) নয়ন কারকুন জানান, মার্কেটে উত্তেজনার খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থলে দ্রুত চলে আসি এবং ছাত্রদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করি। আমরা উভয় পক্ষের সমঝোতার চেষ্টা করছি এবং এব্যাপারে জাবি প্রশাসনে খুবই সাহায্য করেছে। এ ব্যাপারে কেউ যদি আইনগত সহায়তা নিতে চায় তাহলে আমরা প্রস্তুত আছি এবং কেউ যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা গ্রহণ করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *