নবীনদের ভাবনায় নতুন বছর

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম বছর সবচেয়ে রোমাঞ্চে ভরপুর। নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন পরিবেশে আর নতুন একটা পরিচয়ে একজন শিক্ষার্থী বসবাস করে তার কল্পনার সাগরে।স্বপ্ন দেখে সমাজ ও দেশ বদলে ফেলার।কেউ আত্ননিয়োগ করে নিজেকে গঠন করতে কেউ কেউ আবার হারিয়ে যায় নিজেকে বিকশিত করার আগেই। তরুণরাই একটি জাতির সম্পদ,তারাই পারে জাতির মুক্তির দূত হতে। তরুণরা ঘুরে দাড়ালে ঘুরে দাড়াবে বাংলাদেশ।বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে দরকার প্রাণশক্তিতে ভরপুর তরুণ প্রজন্মের যারা নিজেকে গড়ে তুলবে সুনাগরিক হিসেবে, সেবায় নিয়োজিত থাকবে দেশ ও জাতির। বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের নতুন বছরে ভাবনা ও প্রত্যশা নিয়ে মতামত তুলে ধরেছেন মো. শফিউল্লাহ্ 

নিয়মের পালা বদল করে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের মাধ্যমে বছরের দিনগুলো শেষ হয়ে নতুন বছর শুরু হয়ে গেছে।বিগত বছরের প্রত্যাশানুযায়ী কর্মপরিকল্পণা বাস্তবায়িত না হলেও নতুন বছর যেন সব কিছুকে ভুলে পূর্ণউদ্যমে নতুন করে প্রাণচঞ্চলতা নিয়ে সব প্রত্যয় বাস্তবায়নের হাতছানি দিচ্ছে।গতবছর ঠিক এ সময়টাতে আর দশজন গড়পড়তা সাধারণ ছাত্রদের মতোই ছিলাম। সময়ের পরিক্রমায় এখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বারান্দায়। এতে করে আমার প্রতি আমার পরিবারের পাশাপাশি সমাজ ও দেশের মানুষের দায়বদ্ধতা তেমনিভাবে বেড়েছে। ঠিক আমার দায়িত্বগুলো পালনে সহযোগীতা করার জন্য দেশের কর্ণধারদের প্রতিও আমার প্রত্যাশা বেড়েছে।স্বপ্ন দেখি আমার দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও বিশ্বের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাতারে দাঁড়াবে। এজন্য প্রয়োজন শিক্ষা গ্রহণের সুন্দর পরিবেশের পাশাপাশি গবেষণা খাতে অনুদান এবং প্রশাসনের সুদৃষ্টি। এ বছর আশা করি বিগত বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বাজেট থাকবে গবেষণা ক্ষেত্রে। এবং মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ তৈরী করা অবশ্য পালনীয় কর্তব্য।

মাহমুদুল হাসান

সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,নোবিপ্রবি

নতুন বছর যেন নতুন করে স্নিগ্ধতা ছড়ায় আমাদের মাঝে। বিগত বছরের শত গ্লানি, ক্লান্তি, ব্যর্থতা ভুলে গিয়ে নতুন করে পথ চলার জন্য আত্মপ্রত্যয়ী  হয়ে উঠতে চায় সকলেই। শিক্ষার্থীদের নিকট নতুন বছর যেন তাদের অপূরণীয় স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য নতুন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দেয়।

 দেশের কর্তব্যপরায়ণ নাগরিক হিসেবে নতুন বছরে আমার একমাত্র প্রত্যাশা, বেকারত্বের অভিশাপ যেন বাংলাদেশ হতে ঘুচে যায় আজীবনের জন্য। দারিদ্রতার করাল গ্রাস যেন আর কাউকে স্পর্শ করতে না পারে। সকলের মুখে যেন ফুটে অনাবিল হাসি। আমি এই বার্তা সবার নিকট পৌঁছে দিতে চাই। সকলের অকৃত্তিম প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের দেশকে সগৌরবে বিশ্বমঞ্চে দাঁড় করাতে পারবো। এ বছরটা যেন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় বছর হিসেবে লিপিবদ্ধ হতে পারে সেই কামনায় সাদরে স্বাগত জানাচ্ছি ২০২৪ কে। সকলের প্রতি রইল আমার একরাশ ভালোবাসা।

মাইমুনা ইলমা,

ইংরেজি বিভাগ,নোবিপ্রবি

 সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাতে চাই। নতুন বছরের আগমনে সচেতন ব্যক্তি মাত্রই সজাগ হয়ে যায় নতুন একটা বছরের সার্বিক পরিকল্পনায়।সবাই বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনায় ও আগ্রহে নতুন বছরকে বরণ করে। বছরটা যেহেতু নতুন,  তাই এই নতুন সময়কে ঘিরে সবার মনেই কিছু প্রত্যাশা থাকে, আমারও আছে। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি চাই নতুন বছরে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা গুছিয়ে করার পাশাপাশি আরও নতুন কিছু শিখব যা আমাকে মানুষ থেকে মানব শক্তি তে রূপান্তর করবে। খ্যাতিমান লেখকদের বই পড়ে নিজেকে আলোকিত করবো।শরীর চর্চা করতে নিয়মিত ফুটবল খেলবো যা শরীর ও মন সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে,মাদক মুক্ত তরুণ প্রজন্ম গঠনে সহায়ক হবে।  প্রিয় মানুষদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে  আর্জন করতে চাই সফলতা যা পরিবারের , সমাজের সর্বপরি দেশের জন্য সস্মান বয়ে আনবে। নতুন বছর সবার জীবনে সুখ স্বচ্ছন্দ বয়ে আনুক।

সাকিল,

প্রাণিবিদ্যা বিভাগ,নোবিপ্রবি

সময়ের আবর্তনে জীবন চলে জীবনের নিয়মে।মাস পেরিয়ে আসে বছর।নতুন বছরে গতানুগতিক জীবনধারাকে বদলে দেওয়ার জন্য উঁকিঝুঁকি দেয় নতুন নতুন প্রত্যাশা, স্বপ্ন, আশা, আকাঙ্ক্ষা।কিছু প্রত্যশা বাস্তবায়িত হয় সময়ের সাথে পরিকল্পিত নিয়মে আবার কিছু প্রত্যাশা আবদ্ধ হয়ে যায় প্রকৃতির বেড়াজালে।নতুন বছর মানেই নিজেকে আরো একবার নতুন যোদ্ধা হিসেবে গড়ে তোলা, বাস্তব ও জীবনমুখী কর্ম পরিকল্পনায় বছর সাজানো।খাপখাওয়ানোর চেষ্টা নতুন কোনো পরিবেশে। জীবনের উত্থান পতনের জন্য হয়তো সব সময় প্রত্যাশা অনুযায়ী আশানুরূপ ফলাফল আসেনা, কিন্তু হাল ছেড়ে দেওয়া কোনো সাহসী যোদ্ধার হতে কখনোই কাম্য নয়। ২০২৩ সালের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ছিলো নোবিপ্রবির মতো একটি প্ল্যাটফর্মে নিজেকে আবিষ্কার করা।এই প্ল্যাটফর্ম আমার জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে, নব দিগন্তের দ্বারপ্রান্তে আমাকে পৌঁছে দেয়।নতুন বছরে এতটুকু প্রত্যাশা ই থাকবে যেন এই প্ল্যাটফর্মে নিজের সকল প্রতিভা,মনন, জ্ঞান, সৃজনশীলতার পরিপূর্ণ  বিকাশ ঘটাতে পারি। যে প্রত্যাশা নিয়ে আমার এবং আমার মত তরুনদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমন..প্রত্যাশার সাথে বাস্তবতার পার্থক্য যেন শুরুতেই হোচট খাবার মত পরিস্থিতি তৈরী না করে। আশা করি আমার বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে পর্যাপ্ত সুযোগ তৈরী করে দেবে নিজেকে মেলে ধরার।নিজেকে ছাড়িয়ে যাবার সূচনা শুরু করতে চাই এই নতুন বছরের শুরু থেকেই।

মুনতাকা মেহজাবিন

সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,নোবিপ্রবি

নতুন বছরে নতুন ভাবে নিজেকে সাজাতে চাই। বদলে ফেলতে চাই পুরোনো বদভ্যাস ।এই প্রজন্মের বড় সমস্যা মোবাইল আসক্তি।এ ধরনের আভ্যাস বদলে আর্জন করতে চাই ভালো গুন । বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর পারিবারিক শিক্ষা ভুলে নতুন শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে। নিয়মিত ধর্ম চর্চার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে চাই । বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির লক্ষ্য শুধু  একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য না,বরং নিজেকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়। বিশ্ববিদ্যালয় কে স্কিল ডেভলপের প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্ম নিয়োগ করবো ইনশাআল্লাহ।

মোজাম্মেল হোসেন,

ওশানোগ্রাফি,নোবিপ্রবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *