কুবিতে সাংবাদিককে বহিষ্কারের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন

সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রতিনিধি ও কুবি সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) বিকাল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে সাংবাদিকরা এ দাবি জানান।

মানববন্ধনে দ্য বিজনেস ¯ট্যান্ডার্ডের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হাসিব সোহেলের সঞ্চালনায় দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শিহাব উদ্দিন বলেন, কুবি উপাচার্যের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, তিনি দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। আমরা মনে করি, একজন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিই শুধুমাত্র দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গেয়ে থাকেন। তাই উপাচার্য যে একজন দুর্নীতিবাজ এতে আর সন্দেহ নেই। আমরা আশা করেছিলাম, তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু তিনি তা না করে উলটো সাংবাদিককে বহিষ্কার করেছেন, যা অতি নিন্দনীয়। কারণ দর্শানোর নোটিশ ও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তড়িঘড়ি বহিষ্কারের মাধ্যমে উপাচার্য নিজের স্বৈরাচারী মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং একইসাথে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।

দৈনিক আমাদের সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নোমান বিন হারুন বলেন, আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি সা¤প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা সরকার ও প্রশাসনের পদলেহনকারী একটি গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা যেখানে শিক্ষা ও গবেষণায় মানোন্নয়নে কাজ করার কথা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে সচেতন হওয়ার কথা। সেখানে তারা প্রশাসনের পদলেহনে লিপ্ত আছেন। কবি উপাচার্য নিজেই শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির সাথে জড়িত। আমরা অবিলম্বে সাংবাদিক ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক রাকিব আহমেদ বলেন, একটি সমাজে সাংবাদিকদের যদি লেখার স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের অধিকার না থাকে তাহলে সেই সমাজ কখনই কাংখিত লক্ষ্যে পৌছতে পারে না। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতার পরিবেশ তৈরি হোক।

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, একজন সাংবাদিককে বহিষ্কার করে কুবি উপাচার্য যে কাজ করেছেন তা অগণতান্ত্রিক ও সংবিধানবিরোধী। তিনি সংবিধানের ২০(২) ধারায় নাগরিক অধিকার ভঙ্গ করেছেন এবং দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।

সমাপনী বক্তব্যে দৈনিক ইত্তেফাকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, সংবাদের বিপরীতে তার যে বক্তব্য তা বলার সুযোগ না দিয়েই একটি অফিস আদেশের মাধ্যমে একজন সাংবাদিককে বহিষ্কার করার ঘটনা ঘটেছে। আমরা আজকের মানবন্ধন থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একজন উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভ প্রকাশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবহার করে উপাচার্য পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিউ এজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শাহাদাৎ হোসাইন, বণিক বার্তার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী মামুন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *