জাবির সাবেক শিক্ষার্থীকে বাসা থেকে তুলে এনে ছাত্রলীগের মারধর

জাবির সাবেক শিক্ষার্থীকে বাসা থেকে তুলে এনে ছাত্রলীগের মারধর

ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকার সন্দেহে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক এক শিক্ষার্থীকে বাসা থেকে তুলে এনে মারধরের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (১ নভেম্বর) বিকাল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী আমবাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মিজানুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৪ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মিজান পার্শ্ববর্তী আমবাগান এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। বিএনপির অবরোধ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকগুলোতে তালা লাগানোর ঘটনায় মিজানকে সন্দেহভাজন হিসেবে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসে ছাত্রলীগ কর্মীরা। ২০-২৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী তাকে মারধর করতে করতে পরিবহন চত্বরের দিকে নিয়ে আসে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। পরে মোটরসাইকেল থেকে নামানোর সময় মিজান পালিয়ে ফজিলাতুন্নেছা হলের দিকে চলে যায়।

মারধরের সময় ঘটনাস্থলে মাহিদ হাসান (প্রত্নতত্ত্ব ৪৭), মাশুকুর রহমান ফাহিম (প্রত্নতত্ত্ব ৪৭), সরোয়ার শাকিল (ইতিহাস ৪৭), তৌহিদুল ইসলাম শুভ, জিসান আহমেদ রনি (অর্থনীতি ৪৭), আশেক মাহমুদ সোহান (তুলনামূলক সাহিত্য ৪৭), মামুন (ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান ৪৭), রাজু শেখ (প্রত্নতত্ত্ব ৪৬), শান্ত মাহবুব (নৃবিজ্ঞান ৪৬), রাশেদ (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ৪৬), হাসিব (ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং ৪৬), অরবিন্দ (ইতিহাস ৪৬) সহ প্রায় ৩০ জন সরাসরি উপস্থিত ছিল বলে জানান ভুক্তভোগী মিজান।

অভিযুক্তরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী সাবেক শিক্ষার্থী মিজান বলেন, আমি আমবাগানের বাসায় ছিলাম। ছাত্রলীগের ছেলেরা হঠাৎ আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে এসেছে। তারপর আমাকে মারধর করে জোরপূর্বক আমবাগান গেইটে তালা লাগানোর ভিডিও ধারণ করে। অথচ সকালের অবরোধ কর্মসূচিতে আমি ছিলাম না। আমাদের অংশ থেকে এ অবরোধ কর্মসূচী পালন করা হয় নাই। আমাকে মাথায়, পিঠে ও পায়ে মারাত্মক জখম করেছে। এখন আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি।

সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, ‘ছাত্রলীগ এখন জঙ্গি সংগঠনে পরিনত হয়েছে। মসনদ হারানোর ভয়ে তারা ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উপর নৃশংস হামলা চালাচ্ছে। অচিরেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে তাদের হামলার জবাব দেয়া হবে।’

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকত বলেন, ‘আজ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচী সফল করে। জাবিতে অবরোধ কর্মসূচী সফল হওয়ায় ছাত্রলীগ উন্মাদ হয়ে তাদের নিয়মিত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের এক কর্মী মিজানুর রহমানকে মারাত্মক আহত করেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শেষবারের মত ছাত্রলীগের এই সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক দাবি করছি। অন্যথায় ছাত্রলীগকে ক্যাম্পাসেই এ ঘটনার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *