জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা ‘পরেশ-ময়েন সম্মাননা’ লাভ করেছেন। বাংলা সাহিত্যে উত্তরাধুনিক চিন্তার সনেট রচনা এবং সনেটের গঠনের ভেতর চলমান জীবন ও সংস্কৃতির মনস্তাত্ত্বিক প্রেষণা প্রণয়নে অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করায় তিনি এ সম্মাননা লাভ করেন।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার গোলাপগঞ্জে কৈকুড়ী শিবমন্দির ও প্রাইমারী স্কুল মাঠে পরেশ-ময়েন মেলায় তার হাতে এ সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। পালাটিয়া শিল্পী পরেশ গণনাট্যশিল্পী-সংগঠক ময়েন চিশতীর স্মরণে এ মেলার আয়োজন করে পরেশ-ময়েন মেলা পর্ষদ।মেলার এবারের আসরে কবি ও অধ্যাপক তারেক রেজার সাথে এ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন ঔপন্যাসিক লায়লা চৌধুরী।
জানা যায়, পালাটিয়া শিল্পী পরেশের অকাল প্রয়াণে এবং ‘থিয়েটার ওপেন টু বায়োস্কোপ’ এর স্বপ্নদ্রষ্টা গণনাট্যশিল্পী-সংগঠক ময়েন চিশতীর তত্ত্বাবধানে এক যুগেরও আগে বীরগঞ্জের গোলাপগঞ্জের কৈকুড়ীতে একটি লোকমেলার জন্ম হয়। পরবর্তীতে ময়েন চিস্তি ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে অকাল প্রয়াত হলে এই মেলা ‘পরেশ ময়েন মেলা’ হয়ে ওঠে। প্রতিবছর ২৯ নভেম্বর এ অঞ্চলের লোকশিল্পীদের সমাগমে এই কৈকুড়ী শিব মন্দির মেলা প্রাঙ্গণ জেগে ওঠে।
আয়োজকরা জানান, প্রতিবছর দু’জন কীর্তিমানকে এই মেলায় সম্মানিত করা হয়। এ মেলায় ইতোমধ্যে সম্মানিত হয়েছেন নাট্যকার মামুনুর রশিদ, শংকর সাওজাল, রাহেল রাজিব, শাহজাহান শাহ, কাজী বোরহান, ডা. শান্তনু বসু, ডা. আহাদ আলী প্রমুখ।
সম্মাননাপ্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে অধ্যাপক তারেক রেজা বলেন, ‘যে কোনো পুরষ্কার বা সম্মাননা একজন সৃজনশীল মানুষকে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে অনেক বেশি সজাগ ও সতর্ক করে তোলে। মানুষকে ভালোবাসার যে মন্ত্র আমাকে কবিতা লিখতে অনুপ্রাণিত করে, এই পুরষ্কার ও সম্মান তাতে নতুন মাত্রা দেবে। কবিতার মাধ্যমে আমি মূলত আমার ভালোবাসার কথা বলতে চাই। এই সম্মাননার মাধ্যমে আসলে আমার ভালোবাসাই স্বীকৃতি দেয়া হলো।’
দিনব্যাপী এ মেলায় অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিল পরেশ স্মরণে কীর্তন ও ভোগ বিতরণ, লোকশিল্পীদের পরিবেশনা, পশ্চিমবঙ্গের শিল্পী শিলা রায়ের সংগীত পরিবেশন এবং রাতভর ঢোলের গান ও পালাটিয়া পরিবেশন।